সোমবার, ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ইং
০১:০১ এম
ভাষা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক ক্লাব, অস্টডিসি কালপুরুষ। এই প্রতিযোগিতাটি একুশে ডিবেটিং ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতাটি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, "এই সংসদ মৃত্যুভয়ের সংস্কৃতিকে নেতিবাচক মনে করে।" এই বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তি ও বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
বিতর্কের বিপক্ষ দলে ছিলেন আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী, যারা হলেন হাসনাত আবীর অঙ্গন, শেখ আসিফ এবং সাফি আহম্মদউল্লাহ। এই প্রতিযোগিতায় সেরা বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন শেখ আসিফ, যার বক্তব্য বিচারকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।
রানার্সআপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে পক্ষ দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের বিতর্কের দক্ষতা প্রদর্শন করার সুযোগ পেয়েছেন এবং ভাষা দিবসের গুরুত্বকে তুলে ধরার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
মৌলভীবাজারে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মাদকাসক্ত বাবার হাতে সাত বছর বয়সী একটি ছেলে খুন হয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার শহরতলির জগন্নাথপুর গ্রামে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাবা খোকন মিয়া তার ছেলে মাহিদকে মারধর করে হত্যা করেছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, শিশুটি বিছানায় পায়খানা করে ফেললে ক্ষিপ্ত হয়ে খোকন মিয়া তাকে ঘর থেকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর তিনি শিশুটিকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে, তিনি মাহিদকে মাটিতে ফেলে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন, যার ফলে শিশুটি রক্তাক্ত হয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসলেও খোকন মিয়া তাদের বাধা দেন। পরে, মুমূর্ষু অবস্থায় খোকন মিয়া নিজেই মাহিদকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে খোকন মিয়া কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যা রাতে জেলগেট এলাকা থেকে তাকে আটক করে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, খোকন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। উল্লেখ্য, শিশুটি খোকন মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে উল্লেখ করেছেন যে, বিএনপি দেশের মঙ্গলের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। তিনি বলেন, "এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। বিএনপি চায় এ সরকার সফল হোক।"
এ বক্তব্যটি তিনি ভোলা জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, "বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আন্দোলন করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না, এবং সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে দেশে অনেক আইন প্রণয়ন করতে হবে।"
জয়নুল আবেদীন উল্লেখ করেন যে, স্থানীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, "এ দেশের মঙ্গলের জন্য, জাতীর মঙ্গলের জন্য এবং যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাতের জন্য বিএনপি মনে করে যতটা সংস্কার দরকার সেই সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত গতিতে জাতীয় নির্বাচন দেয়া উচিত। এতেই দেশের মঙ্গল, জাতীর মঙ্গল।"
অনুষ্ঠানে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মো. ফরিদুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ.এইচ.এম মাহমুদুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বাছেতসহ অন্যান্য অতিথিরা।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
ঘাটাইলের সড়কে সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। সম্প্রতি, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে গাছের গুঁড়ি ফেলে ১০টি যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল চালকদের সর্বস্ব লুট করার পাশাপাশি তাদের মারধরও করেছে। এ ঘটনায় যানবাহনগুলো ভাঙচুর করা হয়েছে।
এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে, যখন ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের সন্ধানপুর ইউনিয়নের ফকিরচালা এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাতির শিকার যানবাহনের মধ্যে ছিল ট্রাক, সিএনজি এবং মোটরসাইকেল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সড়কে গাড়ির ভাঙচুরের কাচের টুকরো পড়ে ছিল এবং পাশেই একটি গাছের গুঁড়ি ছিল। ডাকাতরা এই গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এরপর চালকদের মারধর করে মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা লুট করে নেয়।
ডাকাতির শিকার হন মিন্টু মিয়া (৩৫), যিনি একটি ১০ চাকার বড় ট্রাক চালক। তিনি জানান, অনেকগুলো গাড়ির সারি দেখে গাড়ির গ্লাস নামিয়ে জানতে চান এখানে কি ঘটছে। তখন ডাকাত দলের একজন এসে তাকে বলেন, "এখানে কি হচ্ছে তুই বুঝছ না? যা আছে বের কর।" না দিতে চাইলে তাকে মারধর করা হয় এবং তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকার একটি স্মার্টফোন লুট করে নেয়।
মিন্টু আরও জানান, ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তিনি অন্যান্য চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন যে ১০টি গাড়ি, সিএনজি এবং মোটরসাইকেল ডাকাতির কবলে পড়েছে। কাঁচামালের ট্রাকের চালকের কাছ থেকে ডাকাতরা ৬০ হাজার টাকা লুট করে।
ডাকাতির শিকার হওয়া তিনটি ড্রাম ট্রাকের মালিক বাদল ফকির জানান, রাতে তার গাড়ির চালককে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পান। অপর চালককে ফোন দিলে সে রিসিভ করেনি। কিছুক্ষণ পর মোন্নাফ মিয়া নামে অপর চালক ফোন করে তাকে জানায় যে ট্রাকগুলো ডাকাতের কবলে পড়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘাটাইল থানায় ফোন করেন।
বাদল আরও জানান, চালকদের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাতরা তিনটি স্মার্টফোন, একটি বাটন ফোন এবং ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। মারধরের শিকার হয়েছেন চালকরা। তিনি ঢাকায় থাকায় আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারছেন না, তবে ঘাটাইল ফিরে আইন অনুযায়ী যা করার করবেন বলে জানান।
ডাকাতির শিকার হন বাইচাইল গ্রামের শহিদুল ইসলাম টিক্কাও। তিনি জানান, তার কাছে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা এবং একটি স্মার্টফোন ডাকাতরা নিয়ে যায়।
এটি উল্লেখযোগ্য যে, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ৫টি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ভুক্তভোগী একজন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। ২৪ নভেম্বর, লক্ষিন্দর ইউনিয়নের বেইলা গ্রামে তার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত আড়াইটার দিকে ১০/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়ির গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ঘরের সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা আলমারি ভেঙে ১৩ ভরি সোনার গহনা, ৫০ ভরি রূপা, দেড় লাখ টাকা নগদ এবং একটি স্মার্টফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির পর ভুক্তভোগীদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম ২৮ নভেম্বর থানায় মামলা করেন।
মামলা নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গত সপ্তাহে সাগরদীঘি তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর তদন্তের কাছে মামলার অগ্রগতি জানতে চাইলে তাকে জানানো হয় যে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, পুলিশ বারবার এ ধরনের কথা বলছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আগামী সপ্তাহে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন।
ডাকাতির বিষয়ে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাতির ঘটনায় যারা ছিল তাদের বয়স খুবই কম। ডাকাতরা একটি বাটন মোবাইল, কয়েকটি স্মার্টফোন এবং কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
শাহনাজ আক্তার পারভীন, যিনি শানু নামে পরিচিত, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শিকলবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। তিনি সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু তাঁর মানসিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। স্থানীয়দের মতে, তাঁর জীবন একটি গভীর মানবিক সংকটের প্রতীক।
শানুর পৈতৃক পরিচয় হলো মুক্তাগাছা পৌর শহরের নন্দীবাড়ীর মৃত আব্দুস সালাম ও আসমা বেগমের কন্যা। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মেধা ও আচরণ প্রতিবেশীদের মাঝে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২০০৬ সালে তাঁর বিয়ে হয় জেলার তারাকান্দায়, যেখানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তবে, এই সুখের দিনগুলো বেশিদিন স্থায়ী হয়নি; বিয়ের দেড় বছর পর তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। স্বামীর কাছে রেখে দেওয়া একমাত্র সন্তানকে হারানোর শোকে শানু ধীরে ধীরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সন্তানের শোকে পাগল হয়ে তিনি রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে থাকেন। পরিবারের অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব হয়নি, ফলে শানুর মানসিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হতে থাকে। অবশেষে, পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়ে তাঁকে ঘরবন্দী করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ অসহায় মেয়েটির ভাগ্যে কখনও সরকারি অনুদান বা সহায়তা জোটেনি।
প্রতিবেশীরা জানান, শানুর একটি ভাই রয়েছে, যিনি দর্জির কাজ করেন। পরিবারের আয়ের কোনো উৎস নেই এবং ভাইয়ের সংসারে চারজন সদস্য রয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন বোন ও মাকে সে লালন-পালন করে। শানুকে শিকলে বেঁধে না রাখলে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যান, যা পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের ধারণা, যদি শানুকে ভালো চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়, তবে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সক্ষম হবেন।
শানুর মা, ষাটোর্ধ্ব আসমা বেগম, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "টাকার অভাবে মেয়েকে ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সারাদিন মেয়ের পিছনে লেগে থাকতে হয়। আমি মরে গেলে কে দেখাশুনা করবে তাকে।"
মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না বলে জানান। তিনি শানুর পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে সরকারিভাবে সহায়তার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ