রবিবার, ১৬ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ইং
০৯:১০ পি.এম
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি একটি বৈঠকে মন্তব্য করেছেন যে, দেশের ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি থামানো সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, "আমরা খুবই সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। যদি আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে আমাদের উন্নতির সুযোগ রয়েছে।"
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, নেপাল জলবিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি রয়েছে এবং বাংলাদেশও এটি গ্রহণে আগ্রহী। তবে, ভারতের ৪০ কিলোমিটার পথ এই প্রক্রিয়ায় একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত তাদের স্বার্থের কারণে এই বাধা দূর করবে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। আমাদের পণ্য নেপালে যাবে এবং সেভেন সিস্টার্সে যাবে। প্রতিবেশীদের পণ্য আমাদের দেশে আসবে, এবং এভাবে বাংলাদেশ একটি লাভজনক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।"
তিনি আরও বলেন, "হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। আমি হতাশ হই না। আমাদের এখানের মানুষদের এক সময় বোঝা মনে করা হতো, কিন্তু আমি তাদের সম্পদ মনে করি। আগামী দিনে আমাদের এখান থেকে অনেক কর্মী নেয়া হবে। আমরা তেমন করেই নিজেদের গড়ে তুলতে চাই।"
প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম এন্ড মিনি চিড়িয়াখানা থেকে অবৈধভাবে রাখা ৩১টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযানে বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, দিনব্যাপী এই অভিযানটি কলুকাঠি এলাকায় পরিচালিত হয়। উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলো ভাল্লুক, মিঠা পানির কুমির, বার্মিজ অজগর, সজারু, মেছো বিড়াল, কালিম পাখি, ঘুঘু পাখি এবং বালিহাঁস। বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মকর্তাগণ জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রাণীগুলো খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শিত হচ্ছিল।
বন্যপ্রাণী আইন ২০১২ অনুযায়ী, অনুমতি ব্যতীত বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি জানার পর বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর মধ্যে কিছু প্রাণী গাজীপুরের সাফারি পার্কে স্থানান্তরিত করা হয়, এবং কিছু পাখি অবমুক্ত করা হয়।
মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম এন্ড মিনি চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম জানান, "বন্যপ্রাণীগুলো এভাবে রাখা যাবে না, বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না। গত আড়াই মাস আগে আমরা বন বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম আমাদের কাছে অনুমোদিত প্রাণী সম্পর্কে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তারা সেই প্রাণীগুলো নিয়ে গেছে এবং কিছু পাখি অবমুক্ত করেছে। তবে যদি আইনি বিষয়টি জানতাম, তাহলে আমরা আগেই ছেড়ে দিতাম। আজ তারা এসে আমাদের অবগত করার পর আমরা এসব প্রাণী তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।"
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, "আমাদের কাছে তথ্য ছিলো যে এখানে অবৈধভাবে দশ প্রজাতির ৩১টি বন্যপ্রাণী খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শন করা হচ্ছিল। সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, আমরা এসব বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছি। কিছু প্রাণী গাজীপুর সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে এবং কিছু অবমুক্ত করা হয়েছে।"
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
গাজা উপত্যকার রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শত শত ট্রাক, যেগুলো বুলডোজার এবং ভ্রাম্যমাণ বাড়ি বহন করছে। এই ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস ও ইসরাইলের ষষ্ঠ ধাপের বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হওয়ার পর এসব ভ্রাম্যমাণ বাড়ি গাজায় ঢোকার কথা ছিল। তবে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এই ত্রাণ সামগ্রীগুলো গাজায় প্রবেশ করতে অনুমতি দিচ্ছে না, যার ফলে লাখ লাখ উদ্বাস্তু মানুষের অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
প্রায় ১৫ মাসের নজিরবিহীন সামরিক আগ্রাসনের ফলে এক সময়ের সাজানো-গোছানো গাজা উপত্যকা এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছে। যদিও গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, গাজায় খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকট বিরাজমান। তীব্র শীত এবং খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে গাজাবাসী খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে।
বিভিন্ন দেশ থেকে অস্থায়ী ভ্রাম্যমাণ বাড়ি এবং সেগুলো স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, হামাস ও ইসরাইলের ষষ্ঠ ধাপের বন্দি বিনিময়ের পর এসব ভ্রাম্যমাণ বাড়ি গাজায় প্রবেশের কথা ছিল। কিন্তু ইসরাইলের বাধার কারণে এই ত্রাণ ও সহায়তা গাজার জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। ইসরাইলি গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে যে, ভ্রাম্যমাণ বাড়ি এবং ভারি যন্ত্রপাতি উপত্যকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওবাততাহ রোববার বলেন, "চুক্তি ও মানবিক নীতি অধীনে ইসরাইলের চুক্তি শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে, যা মধ্যস্থতাকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।"
থাওয়াবতাহ আরও উল্লেখ করেন, "ইসরাইলের হামলায় ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো মোবাইল হোম বা ভারি যন্ত্রপাতি এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় পৌঁছায়নি।" তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য ইসরাইলের ওপর প্রকৃত চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস, সম্প্রতি একটি সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে বলেন, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশের তরুণরা যে অসাধারণ উদ্যম ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, তা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি এই মন্তব্য করেন চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসেস কর্তৃক আয়োজিত একটি সম্মেলনে।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ভারত ও চীন দুই মহাশক্তি অবস্থিত। তিনি বলেন, "তারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে, কিন্তু আমাদেরকে পিছনে ফেলে যেতে পারবে না।" তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, কারণ আমাদের সামনে বিস্তীর্ণ মহাসাগর রয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চল একটি বিশাল সুযোগ। তিনি উল্লেখ করেন, "পৃথিবীর দরজা আমাদের সামনে খোলা। আমরা এতদিন এটি ব্যবহার করতে জানতাম না, কিন্তু এখন আমাদের উচিত এর সদ্ব্যবহার করা।"
ড. ইউনূস বলেন, "আমাদের উত্তরে বিখ্যাত হিমালয় পর্বতমালা রয়েছে, যেখানে শক্তি এবং হাইড্রোপাওয়ার জমা রয়েছে।" তিনি বলেন, "বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির সবকিছু সেখানে বিদ্যমান।" তবে, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে ৪০ মাইলের দূরত্ব অতিক্রম করা প্রয়োজন।
প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতিকে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, "দুর্নীতি কোথায় এবং কীভাবে রয়েছে, তা সকলের জানা। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।" তিনি সতর্ক করেন যে, "যদি আমরা সৎ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত না হই, তবে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়।"
তিনি আরও বলেন, "দুর্নীতি থেকে দ্রুত বের হতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আমাদের দুর্নীতিমুক্ত দেখতে চায়।" তিনি উল্লেখ করেন যে, আমরা ব্যক্তিগত সুযোগের পিছনে বেশি ব্যস্ত রয়েছি, কিন্তু জাতীয় সুযোগের বিষয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত।
এছাড়া, তিনি সাধারণ জনগণের সেবা প্রদানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনলাইন সেবার নিশ্চয়তা প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
মেঘনা নদীতে একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। এই দুর্ঘটনায় চারজন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও, রবিউল নামে ৬ বছর বয়সী ওই শিশুর সন্ধান এখনও মেলেনি।
দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ভোলার খাল মাছঘাট এলাকায়। জানা যায়, ওই সময় একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা মাছ ধরার উদ্দেশ্যে মেঘনা নদীতে যাচ্ছিল। নৌকাটি যখন খাল থেকে বের হয়ে নদীতে প্রবেশ করে, তখন চট্টগ্রামগামী এমভি কৌশিক কাবা-২ নামের একটি বাল্কহেড নৌকাটিকে ধাক্কা দেয়, ফলে নৌকাটি ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় জেলেরা একত্রিত হয়ে বাল্কহেডটিকে ধাওয়া করে আটক করে এবং পরে নৌপুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। উদ্ধার অভিযানে নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা নিখোঁজ শিশুটির সন্ধানে কাজ শুরু করেছেন। তবে রাত ৯টা পর্যন্ত রবিউলের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ শিশুর মা মিনারা বেগম বাল্কহেড চালকের শাস্তির পাশাপাশি তার ছেলেকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। আটক চালক মো. কবির বলেন, ‘হঠাৎ করে নৌকাটি খাল থেকে বেরিয়ে বাল্কহেডের নিচে চলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক কিছু করতে পারিনি।’
ইলিশ নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন উদ্দিন জানিয়েছেন, নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং বাল্কহেডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ