বুধবার, ১৫ই জানুয়ারী, ২০২৫ ইং
১১:৫২ এম
সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি একটি নতুন স্বাস্থ্য নীতিমালা ঘোষণা করেছে, যা উমরাহ বা অন্যান্য ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে প্রবেশের জন্য মেনিনজাইটিসের টিকা নেওয়াকে বাধ্যতামূলক করেছে। এই সিদ্ধান্তটি সংক্রামক ও বিপজ্জনক রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ বছরের বেশি বয়সী সকল ভ্রমণকারীর জন্য মেনিনজাইটিসের টিকা গ্রহণ করা অপরিহার্য। ভ্রমণের কমপক্ষে ১০ দিন আগে এই টিকা গ্রহণ করতে হবে এবং ভ্রমণের সময় টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
সৌদি প্রশাসন জানিয়েছে, যারা গত ১০ বছরের মধ্যে মেনিনজাইটিসের টিকা নিয়েছেন, তাদের জন্য নতুন করে টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এছাড়া, উমরাহ যাত্রীদের করোনাভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং পোলিওর টিকা নেওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষত, পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য পোলিও টিকার সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আফগানিস্তান, কেনিয়া, কঙ্গো এবং মোজাম্বিকে ট্রানজিট যাত্রীদেরও পোলিও টিকা গ্রহণ করতে হবে।
সৌদি সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (এসসিএএ) এই নতুন স্বাস্থ্য শর্তাবলী মেনে চলার জন্য ভ্রমণকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই নীতিমালা উমরাহ পালন ও অন্যান্য ভ্রমণের সময় স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
বাংলাদেশের বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল আসামিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস প্রদান করেছে আপিল বিভাগ। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ মামলার রায় ঘোষণার সময় এই পর্যবেক্ষণ প্রদান করে।
আপিল বিভাগ হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতের পূর্ববর্তী রায় বাতিল করে উল্লেখ করেছে যে, এই বিচার প্রতিহিংসার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছিল। রায়ে বলা হয়, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ সকল আসামি নিরপরাধ। বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানসহ আসামিদের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, কিন্তু আজ তারা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
আইনি লড়াইয়ে অবশেষে জয়ী হলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ ১৭ বছর পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তিনি এবং অন্যান্য আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হলেন। এই মামলার কারণে সংসদে এবং বাইরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানান কটু মন্তব্যের শিকার হতে হয়েছে বেগম জিয়াকে।
বেগম জিয়ার আইনজীবীরা মামলাটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক হিসেবে উল্লেখ করলেও পূর্ববর্তী আদালতগুলো তাদের দাবি গ্রহণ করেনি। অবশেষে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আদালত তাদের নির্দোষ প্রমাণিত করেছে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, এবং অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন।
অপরদিকে, আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় বেগম জিয়াকে ৫ বছরের সাজা প্রদান করা হয়, যা পরবর্তীতে হাইকোর্টে নজিরবিহীনভাবে ১০ বছরে বৃদ্ধি করা হয়। এই মামলায় বেগম জিয়া ২ বছর ১ মাস ১৩ দিন কারাগারে কাটান।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে, অপরাধে জড়িত সকল সরকারি কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি এই মন্তব্যটি আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি জানান যে, ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অপরাধ কার্যক্রমে এবং বিতর্কিত ভূমিকা পালনকারী পুলিশসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে, ছাগল মতিউর নামে পরিচিত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে অপরাধে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, "বিতর্কিত ভূমিকার পরও অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তাদের বদলি ও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।" তিনি উল্লেখ করেন যে, যারা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন তাদের অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ১ থেকে ২ জন করে গ্রেফতার হচ্ছেন।"
তিনি আরও জানান, "যেমন আজকে মতিউরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকেও এতদিন ধরে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অন্যান্যদেরও ধরা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।" তিনি উল্লেখ করেন যে, সকলকে একদিনে গ্রেফতার করা সম্ভব নয়, কারণ অনেকেই লুকিয়ে আছেন এবং তাদের খুঁজে বের করে ধরা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "ইনকোয়ারির পর যাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।" তিনি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "পার্শ্ববর্তী দেশের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আপনারা সঠিক ও স্বচ্ছ সাংবাদিকতা করেছেন।" তবে তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এম আজিজুল হক আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ভোরে রাজধানীর উত্তরায় তার নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
মৃত্যুকালে এম আজিজুল হকের বয়স ছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, এম আজিজুল হকের এক পুত্র, হাসিব আজিজ, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মরহুমের নামাজের জানাজা আজ বাদ যোহর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।
এম আজিজুল হক ১৯৭০ সালে পার্লামেন্ট সদস্য (এম এন এ) আব্দুর রহমান বকাউলের সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪০ সালের ১৩ ডিসেম্বর শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরভাগা বকাউল কান্দিতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের অধীনে ২০০৭ সালে গঠিত ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। তিনি স্থানীয় সরকার, নৌপরিবহন ও বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
এম আজিজুল হক বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রূপালী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ ৪৫ জনের পাসপোর্ট জব্দ করেছে সেনাবাহিনী। এই তথ্যটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়া এবং বানোয়াট বলে প্রতিস্থাপন করেছে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, সারজিস আলমসহ ৪৫ জনের পাসপোর্ট জব্দের বিষয়টি সঠিক নয়। কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই এই দাবি প্রচার করা হচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও এটি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। অনুসন্ধানের সময়, BBC NEWS 2470 নামক একটি ব্লগ ওয়েবসাইটে গত ১২ জানুয়ারি “ব্রেকিং নিউজ: সারজিস আলমসহ ৪৫ জনের পাসপোর্ট জব্দ করেছে সেনাবাহিনী” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত ১২ জানুয়ারি রাতে সেনাবাহিনী একটি গোপন অভিযানে সারজিস আলমসহ আরও ৪৪ জনকে আটক করে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা অবৈধ উপায়ে ইউরোপে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পাসপোর্টগুলো জব্দ করেছি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তারা ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।’
তবে, মূলধারার জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে এই বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সারজিস আলম কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগের তথ্যও পাওয়া যায়নি।
রিউমর স্ক্যানার টিম বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরে (আইএসপিআর) যোগাযোগ করে। আইএসপিআর জানায়, ‘এটি একটি মিথ্যা সংবাদ।’ অর্থাৎ, গত ১২ জানুয়ারি BBC NEWS 2470 নামক একটি ভূঁইফোড় ব্লগিং ওয়েবসাইট থেকে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়, যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সুতরাং, সারজিস আলমসহ ৪৫ জনের পাসপোর্ট জব্দ করেছে সেনাবাহিনী শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়া এবং বানোয়াট।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ