প্রধান কার্যালয়: ৫৮/১- পুরানা পল্টন (২য় তলা), ঢাকা-১০০০।
গভ: রেজি:- নং-সি-১৯৬৯৯৯/২০২৪
ফোন:- 02224458547
ই-মেইল- [email protected]
শাহনাজ আক্তার পারভীন, যিনি শানু নামে পরিচিত, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শিকলবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। তিনি সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু তাঁর মানসিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। স্থানীয়দের মতে, তাঁর জীবন একটি গভীর মানবিক সংকটের প্রতীক।
শানুর পৈতৃক পরিচয় হলো মুক্তাগাছা পৌর শহরের নন্দীবাড়ীর মৃত আব্দুস সালাম ও আসমা বেগমের কন্যা। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মেধা ও আচরণ প্রতিবেশীদের মাঝে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২০০৬ সালে তাঁর বিয়ে হয় জেলার তারাকান্দায়, যেখানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তবে, এই সুখের দিনগুলো বেশিদিন স্থায়ী হয়নি; বিয়ের দেড় বছর পর তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। স্বামীর কাছে রেখে দেওয়া একমাত্র সন্তানকে হারানোর শোকে শানু ধীরে ধীরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সন্তানের শোকে পাগল হয়ে তিনি রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে থাকেন। পরিবারের অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব হয়নি, ফলে শানুর মানসিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হতে থাকে। অবশেষে, পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়ে তাঁকে ঘরবন্দী করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ অসহায় মেয়েটির ভাগ্যে কখনও সরকারি অনুদান বা সহায়তা জোটেনি।
প্রতিবেশীরা জানান, শানুর একটি ভাই রয়েছে, যিনি দর্জির কাজ করেন। পরিবারের আয়ের কোনো উৎস নেই এবং ভাইয়ের সংসারে চারজন সদস্য রয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন বোন ও মাকে সে লালন-পালন করে। শানুকে শিকলে বেঁধে না রাখলে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যান, যা পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের ধারণা, যদি শানুকে ভালো চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়, তবে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সক্ষম হবেন।
শানুর মা, ষাটোর্ধ্ব আসমা বেগম, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "টাকার অভাবে মেয়েকে ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সারাদিন মেয়ের পিছনে লেগে থাকতে হয়। আমি মরে গেলে কে দেখাশুনা করবে তাকে।"
মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না বলে জানান। তিনি শানুর পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে সরকারিভাবে সহায়তার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
নিউজের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্ক্যান করুন