বৃহস্পতিবার, ৯ই জানুয়ারী, ২০২৫ ইং
০৫:৫৭ পি.এম
নতুন বছরের শুরুতেই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ডিজেল পরিবহন পাইপলাইনের মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগটি অপচয় এবং চুরি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিবছর প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ইতোমধ্যে পাইপলাইনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাইপলাইনটি চালু হলে সড়ক ও জলপথে পরিবহনের জন্য কোনো অতিরিক্ত ব্যয় হবে না। শুধুমাত্র পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ বিল এবং জমির ভাড়াসহ কিছু খাতে ৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে আয় হবে ৩২৬ কোটি টাকা, যা সাশ্রয়ের পরিমাণকে ২৩৬ কোটি টাকায় নিয়ে আসবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগকৃত অর্থ আগামী ১৬ বছরের মধ্যে উঠে আসবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপলাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে পরিবহন খরচ কমবে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা আরও কার্যকর হবে। পাশাপাশি পরিবেশদূষণও কমবে। শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে যে সংকট দেখা দিত, তা আর থাকবে না। বর্তমানে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহন করতে প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় তেল পরিবহন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ ব্যবহার করা হয়, যার ফলে বছরে দুইশ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়।
দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে ৬৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৯২ শতাংশই আমদানি করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার ৫৯ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল জি-টু-জি চুক্তির আওতায় এবং ২৮ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা হবে। এছাড়া, ১৪ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিপিসি। পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মধ্যে ডিজেল, মোগ্যাস, জেট এ-১, ফার্নেস অয়েল এবং মেরিন ফুয়েল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ডিজেলের চাহিদার ৪০ শতাংশ ঢাকায় ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। রেলওয়ের ওয়াগন থাকলেও লোকোমোটিভের অভাব রয়েছে। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে যানজটসহ নানা সমস্যার কারণে দীর্ঘ সময় লাগে। জলপথেও সমস্যা দেখা দেয়। দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মধ্যে ডিজেল ৭০ শতাংশ। পাইপলাইনটি চালু হলে সরবরাহ নিশ্চিত হবে। যদিও পেট্রোল ও অকটেন আগে যেভাবে সরবরাহ করা হতো, কখনো রেলওয়ে ওয়াগনে করে, কখনো নদীপথে ট্যাঙ্কারে পরিবহন করা হবে।
সূত্র জানায়, নদীপথে লাইটারেজের মাধ্যমে পরিবহন কেন্দ্র করে একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। তেল চুরির ঘটনা লাইটারেজ থেকে তেল খালাসের সময় অপচয় হিসেবে জায়েজ করা হয়। পাইপলাইন চালু হলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে। প্রকল্পটি ঠেকিয়ে রাখতে শুরুতে তেল পরিবহনকারী লাইটারেজ মালিকরা প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছিল। প্রকল্পের ব্যয় শুরুতে ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল, যা পরে সংশোধিত হয়ে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ২৩৭ কিলোমিটার, যার মধ্যে কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার এবং ফতুল্লা থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার। এদিকে, উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। ২০১৮ সালে এই পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যার ব্যয় ৩ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা এবং দৈর্ঘ্য ১৩১.৫০ কিলোমিটার। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু হয়েছে। ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী তেল আমদানি করা হচ্ছে।
বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা তেলের পাইপলাইন আগামী ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষামূলকভাবে এবং মার্চে বাণিজ্যিকভাবে অপারেশনে যাবে। এই পাইপলাইনটি মূলত ডিজেল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে অপচয় এবং চুরি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা শহীদ মনির হোসেনের স্মরণে নিবেদিত। শহীদ মনির হোসেন ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ চালুর আনন্দ শোভাযাত্রায় আঞ্চলিক সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর সন্ত্রাসী হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারী) সকালে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের গেইটের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা শহীদ মনিরের নামে মেডিকেল কলেজের একটি হলের নামকরণ, তার পরিবারকে সরকারি চাকরি প্রদান এবং পুনর্বাসনের দাবি জানান। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজের সভাপতিত্বে এবং পৌর সভাপতি মো: পারভেজ মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ পিসিএনপি'র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: খলিলুর রহমান, সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, পৌর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা উল্লেখ করেন যে, শহীদ মনির হোসেনের আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও তার হত্যার বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি। বক্তারা অভিযোগ করেন যে, মনিরের অবদানকে স্মরণ করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বক্তারা দাবি করেন যে, শহীদ মনিরের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে মেডিকেল কলেজে একটি হল 'শহীদ' মনিরের নামে নামকরণ করা উচিত এবং তার পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা আবশ্যক।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ গ্রহণের সময় আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস নামধারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই বাধা শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রে নয়, বরং সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। বক্তারা উল্লেখ করেন যে, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময়ও জেএসএস (সন্তু) সন্ত্রাসীরা বাধা সৃষ্টি করেছিল এবং তাদের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে বাধা দেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করেছিল।
পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের আধুনিকতা ও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিক্ষা বিস্তারে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান করে আসছে। সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখা জোর দাবি জানায় যে, অবিলম্বে 'শহীদ' মনির হোসেনের নামে মেডিকেল কলেজের একটি হলের নামকরণ করতে হবে, তার পরিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে এবং একই দিনে জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত জামাল হোসেনকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বক্তারা বলেন, যদি এসব দাবি পূরণ না করা হয়, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে একটি কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দেশের কৃষক জনগণের সংগঠনের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় কালিকচ্ছ ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে স্থানীয় শহীদ মিনার চত্বরে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এটি গত তিন মাস ধরে ইউনিয়ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশের একটি অংশ, যার মাধ্যমে কৃষকদের সংগঠিত করার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।
উপজেলা কৃষক দলের নেতৃবৃন্দ গত তিন মাস ধরে পাড়ায় মহল্লায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ঘুরে কৃষকদলের কমিটি গঠন করে তাদেরকে সুসংগঠিত করার কাজটি করছেন। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কালিকচ্ছ ইউনিয়ন কৃষকদল কৃষক সমাবেশের আয়োজন করে, যাতে কৃষকদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা এবং উজ্জীবন সৃষ্টি করা যায়।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন মো. ফারূক হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন কালিকচ্ছ ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক মো. মনিরূজ্জামান মানিক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. নুরূজ্জামান লস্কর তপু।
উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক মো. মশিউর রহমান খানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন, কালিকচ্ছ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরূল আমিন, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন এবং ইউপি বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম।
প্রধান অতিথি কৃষকদের দুঃখ, কষ্ট ও দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে বলেন, "কৃষি ও কৃষক বাঁচলে বাঁচবে বাংলাদেশ।" তিনি সকলকে কৃষকের অধিকার রক্ষায় কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের কৃষকের স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থে কৃষক বান্ধব কার্যক্রম আরো জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রয়োজনে কৃষকদের প্রাপ্তি ও অধিকার আদায়ের জন্য যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যও তিনি নির্দেশ দেন।
এছাড়া, স্থানীয় কৃষক ছাড়াও সাধারণ জনগণও এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন, যা কৃষকদের সংগঠনের জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
একজন প্রতারক, যিনি নিজেকে যুগ্ম সচিব এবং কখনো ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিতেন, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই প্রতারক, আরাফাত রহমান সাহেদ, বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে স্বর্ণালংকার এবং নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতেন। চাঁদপুর শহরের মহিলা কলেজ রোডের গোল্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত স্বর্ণ মহরা নামক একটি জুয়েলারি দোকানে তিনি যুগ্ম সচিব পরিচয়ে ৪টি স্বর্ণের চেইন কিনে পালিয়ে যান।
চাঁদপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগের পর, ওসি বাহার মিয়ার নির্দেশে এসআই স্বপন নন্দী এবং ডিবির ওসি মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে রাজধানীর উত্তরা থেকে প্রতারক আরাফাত রহমান সাহেদ (৫৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৯ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা নগদ, বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট, আইডি কার্ড এবং ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাহেদ নোয়খালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার ৭ নম্বর ইউনিয়নের বজরা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের পুত্র। তিনি ব্যাংক ম্যানেজার মো. সাইফুল ইসলামের মোবাইলে নিজেকে মো. জুলকার নয়ন পরিচয়ে পরিচয় দেন এবং ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম তার নামের সাথে মিল পেয়ে তথ্য প্রদান করেন।
পরবর্তীতে সাহেদ ম্যানেজারকে ফোন করে জানান যে তিনি চাঁদপুরে একটি বিয়েতে অংশগ্রহণ করবেন এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের রেস্ট হাউজে অবস্থান করছেন। তিনি ম্যানেজারকে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন এবং ডিসি ও এসপির সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিছুক্ষণ পর, সাহেদ আবার ম্যানেজারকে ফোন করে জানান যে তার স্ত্রী কিছু স্বর্ণের গহনা কিনবেন এবং তিনি স্বর্ণ মহরার স্বত্তাধিকারী মো. নাজির আহম্মেদের কাছে স্বর্ণ কেনার পরামর্শ দেন।
এরপর, সাহেদ ওই দোকানে গিয়ে ৩ ভরি ৯.৫ আনা ওজনের ৫টি স্বর্ণের চেইন ক্রয় করেন এবং টাকা পরিশোধের জন্য ক্রেডিট কার্ড প্রদান করেন। দোকানে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায়, তিনি দোকানের কর্মচারীকে তার গাড়িতে করে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে কর্মচারীকে বসিয়ে রেখে সাহেদ কৌশলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান।
এই ঘটনার পর, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই স্বপন নন্দী তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সাহেদকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারের পর, তার দেয়া তথ্যে মামলার আলামত হিসেবে ৬টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন, নগদ ৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা, ভিজিটিং কার্ড, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট এবং স্বর্ণের খালি বক্স জব্দ করা হয়।
প্রতারক সাহেদ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতারণা করে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর ছাড়াও অন্যান্য জেলায় মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার জন্য ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন সম্প্রতি এক প্রস্তুতি সভায় মন্তব্য করেছেন যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না। তিনি এই বক্তব্যটি ৯ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার, মাদারীপুর পৌর অডিটোরিয়ামে জেলা বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত কাউন্সিলের প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রদান করেন।
রিপন বলেন, "স্থানীয় সরকারের ব্যাপারে সরকার একটি কমিশন গঠন করেছেন। আমরা আগে দেখতে চাই এই কমিশন কী রিপোর্ট দেয়। এরপর আমাদের দলের অবস্থান কী হবে, সেটি আমরা নির্ধারণ করবো।" তিনি সরকারের প্রতি অভিযোগ করে বলেন, "এই সরকার সংস্কারের কথা বলে কালক্ষেপণ করছেন। সংস্কারের জন্য এক বছর সময় লাগে না। যারা বলেন অল্প সংস্কার চাইলে এই বছরেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। কিন্তু বেশি সংস্কার চাইলে কত সালে নির্বাচন দিবেন, এ কথা সরকার বলেনি।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, "সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, বেশি সংস্কার করলেও ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। অর্থাৎ, কী কী সংস্কার করবেন, তা রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করুন। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হয়, তাহলে এই সংস্কারগুলো করার জন্য তেমন কিছুই দরকার নেই।"
রিপন বলেন, "শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করবেন। যদি একটি সংস্কার হয়, একটি অধ্যাদেশ জারি করবেন, আর যদি ২০০ সংস্কার হয়, তাহলে ২০০টি অধ্যাদেশ জারি করবেন। সংস্কার করার জন্য এত টালবাহানা করার দরকার কী? সরকার নিজেও কোনো সংস্কার করছেন না।"
এ সভায় মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়া সভাপতিত্ব করেন এবং সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান সভাটি পরিচালনা করেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির।
সভায় বক্তারা কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মাদারীপুর জেলা, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের আশ্বাস প্রদান করেন।
তালাশ বিডি/মিডিয়া লিঃ