প্রধান কার্যালয়: ৫৮/১- পুরানা পল্টন (২য় তলা), ঢাকা-১০০০।
গভ: রেজি:- নং-সি-১৯৬৯৯৯/২০২৪
ফোন:- 02224458547
ই-মেইল- [email protected]
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি চিকিৎসকের বাড়িতে কেয়ারটেকার ওহাব মাতুব্বরের হত্যার ঘটনা নিয়ে তদন্তের পর রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। জানা গেছে, চুরি করতে গিয়ে কেয়ারটেকারকে দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি সকালে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য প্রকাশ পায়।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেফতারকৃতরা হলেন: আল আমিন কাজী (৪০), অভি হাওলাদার (২৪) এবং আব্দুর রহমান (২০)। আল আমিন ভাঙ্গা উপজেলার আলেখারকান্দা গ্রামের মৃত রাজ্জাক কাজীর ছেলে, অভি সদরপুর উপজেলার চরব্রাক্ষ্মনদী গ্রামের আব্দুল কাইযুম হাওলাদারের ছেলে এবং আব্দুর রহমান সদরপুর উপজেলার হাজিরকান্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৮ জানুয়ারি ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের আলেখারকান্দা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে কেয়ারটেকার ওহাব মাতুব্বরের (৭০) হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়িটির মালিক ঢাকায় বসবাস করায় ওহাব মাতুব্বর ওই বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশ মাঠে নামে এবং সোমবার আল আমিন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যানুসারে, সদরপুর উপজেলা থেকে অভি হাওলাদার এবং কোতোয়ালি এলাকা থেকে আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, তারা ওই বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। কেয়ারটেকার ওহাব মাতব্বর তাদের দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। নিহতের বোন নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর ভোর রাতে অভিযুক্ত তিনজন ওই বাড়িতে চুরি করতে যান এবং একই রাতে কেয়ারটেকার ওহাব মাতব্বরকে হত্যা করা হয়। নিহত ওহাব মাতব্বর অবিবাহিত ছিলেন এবং তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী তুজারপুর গ্রামে।
বাড়ির মালামাল চুরি হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার জানান, বাড়ির মালিক মৃত চিকিৎসক জামাল উদ্দিনের মেয়ে ফারহার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানান, বাড়িটিতে কিছু আসবাবপত্র এবং থালাবাসন ছাড়া তেমন কিছুই নেই, ফলে তেমন কিছুই খোয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি সকালে নুরজাহান বেগম ভাইকে দেখতে ভিজানো চিতই পিঠা নিয়ে ওই বাড়িতে যান। ডাকাডাকি করে ভাইকে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন এবং চিকিৎসকের স্ত্রী কামরুন্নাহার হেনাকে মোবাইলে কল করে ভাই কোথায় জিজ্ঞাসা করেন। পরে কামরুন্নাহার হেনা জনৈক মনিরুজ্জামানকে ফোন করে তার বাড়িতে যেতে বলেন। মনিরুজ্জামান আরও কয়েকজনকে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। ডাকাডাকি করে ওহাব মাতুব্বরকে না পেয়ে একপর্যায়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলার কক্ষের দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে দুর্গন্ধ পান। এক পর্যায়ে চিলেকোঠায় রশি দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে ৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি জানানো হয়। ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মাদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ বিন কালাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল, ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিউজের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্ক্যান করুন